এক সিম থেকে অন্য সিমে ব্যালেন্স ট্রান্সফার করার নিয়ম। Balance Transfer

বর্তমানে আমাদের প্রায় সকলেরই ২/৩ টা করে সিম রয়েছে। কখনও কখনও কিছু সিমে বেশি ব্যালেন্স থাকে এবং অন্যান্য সিমের ব্যালেন্স থাকে না। তখন আমাদের এক সিম থেকে অন্য সিমে ব্যালেন্স ট্রান্সফার করার প্রয়োজন হয়। কিন্তু আমরা অনেকেই সঠিক নিয়ম জানি না বলে এক সিম থেকে অন্য সিমে ব্যালেন্স ট্রান্সফার করতে পারি না।

এক সিম থেকে অন্য সিমে ব্যালেন্স ট্রান্সফার করার নিয়ম

ফলে নানা ভোগান্তির মধ্যে পরতে হয়। মাঝে মাঝে আমরা বিকাশ, রকেট বা নগদ টাকা পাঠানোর সময় ভুলে রিচার্জ করে ফেলি। তখন আমাদের এক সিম থেকে অন্য সিমে ব্যালেন্স ট্রান্সফার করার প্রয়োজন হয়।

আজ আমি জিপি, রবি, বাংলালিংক এবং এয়ারটেল সিম থেকে কিভাবে ব্যালেন্স ট্রান্সফার করা যায় তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। যেহেতু বিভিন্ন কোম্পানির ব্যালেন্স ট্রান্সফার করার নিয়ম আলাদা তাই , আমরা আলাদাভাবে নিয়ম গুলো বর্ণনা করব।

আরও পড়ুনঃনগদ কাস্টমার কেয়ার নাম্বার ২০২২

জিপি ব্যালেন্স ট্রান্সফারের নিয়ম

গ্রামীণফোন বা জিপি সিমে ব্যালেন্স ট্রান্সফার করার জন্য আমাদের যে ধাপগুলো অতিক্রম করতে হবে:-

  1.জিপি ব্যালেন্স ট্রান্সফারের জন্য, প্রথমে আপনি যে সিম থেকে টাকা পাঠাতে চান সেখান থেকে *121*1500*1# ডায়াল করে রেজিস্টার করতে হবে।  তারপরে আপনি একটি 6-সংখ্যার কোড সম্বলিত একটি নিশ্চিতকরণ বার্তা পাবেন।  এই পিন কোডটি সংরক্ষণ করে রাখুন।

 2.রেজিস্ট্রেশন সম্পূর্ণ হলে, জিপি ব্যালেন্স ট্রান্সফার কোড ডায়াল করুন *121*1500# এবং অপশন 2 নির্বাচন করুন। অথবা আপনি সরাসরি *121*1500*2# ডায়াল করতে পারেন।

  3.তারপর আপনি যে নাম্বারে ব্যালেন্স ট্রান্সফার করতে চান সেই নাম্বারটি লিখে পাঠান।

  4.তারপর পরিমাণ নির্দিষ্ট করুন এবং আবার পাঠান বাটনে ক্লিক করুন।  (মনে রাখবেন যে আপনি সর্বনিম্ন 10 টাকা থেকে 100 টাকা পর্যন্ত জিপি থেকে জিপিতে জিপি ব্যালেন্স ট্রান্সফার করতে পারবেন।)

  5. জিপি ব্যালেন্স ট্রান্সফারের শেষ ধাপে রেজিস্ট্রেশনের সময় দেওয়া পিন কোডটি লিখুন এবং সেন্ড বাটনে ক্লিক করুন।  গ্রামীণফোনে ব্যালেন্স ট্রান্সফার সম্পন্ন হলে আপনি উভয় সিমে একটি নিশ্চিতকরণ SMS পাবেন।

আরও পড়ুনঃবিকাশ পিন পরিবর্তন করার নিয়ম

জিপি ব্যালেন্স ট্রান্সফারের কিছু শর্ত আছে।  শর্তগুলো হল:

  • আপনি যদি আপনার প্রিপেইড সিম 6 মাস বা তার বেশি সময় ধরে ব্যবহার করে থাকেন বা 300 টাকার একক রিচার্জ করে থাকেন তবে আপনি জিপি ব্যালেন্স ট্রান্সফারের কিছু সুবিধা পাবেন।
  • আপনি প্রতি মাসে 10 বার পর্যন্ত জিপি ব্যালেন্স ট্রান্সফার সুবিধা পাবেন।
  • ব্যালেন্স ট্রান্সফারের জন্য পিন কোড অবশ্যই মনে রাখতে হবে।  পিন ভুলে গেলে কাস্টমার কেয়ারে কল করতে হবে।  এ ক্ষেত্রে কার নামে সিম রেজিষ্ট্রেশন করা আছে তার এনআইডি নাম্বার প্রয়োজন হবে।

বাংলালিংক ব্যালেন্স ট্রান্সফারের নিয়ম

বাংলালিংক ব্যালেন্স ট্রান্সফার শুধুমাত্র বাংলালিংক থেকে বাংলালিংক নাম্বারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এই ক্ষেত্রে, আপনাকে ব্যালেন্স ট্রান্সফারে বেশ কয়েকটি কাজ সম্পন্ন করতে হবে।

  1. বাংলালিংক ব্যালেন্স ট্রান্সফারে আপনাকে প্রথমে *1000# ডায়াল করতে হবে এবং 1 লিখে সেন্ড বাটনে ক্লিক করুন। তারপর আপনাকে মেসেজের  মাধ্যমে একটি কোড দেওয়া হবে। এই কোডটি নিজের কাছে সংরক্ষণ করুন।  বাংলালিংক ব্যালেন্স ট্রান্সফারের জন্য কোডটি গুরুত্বপূর্ণ।

  2. আবার *1000# ডায়াল করুন এবং 1 লিখে সেন্ড বাটনে ক্লিক করুন।

  3. বাংলালিংক ব্যালেন্স ট্রান্সফারে, আগে পাওয়া পিনকোডটি লিখুন এবং এটি পাঠান।

  4. এর পর টাকার পরিমাণ লিখে পাঠান, তাহলে বাংলালিংক ব্যালেন্স ট্রান্সফার সম্পন্ন হবে।  (এই ক্ষেত্রে আপনি 10 থেকে 100 টাকা পর্যন্ত এক সিম থেকে অন্য সিমে ব্যালেন্স ট্রান্সফার করতে পারবেন।)

বাংলালিংক ব্যালেন্স ট্রান্সফারে কিছু শর্ত আছে

  • বাংলালিংক ব্যালেন্স ট্রান্সফারের জন্য ব্যবহৃত সিমটি কমপক্ষে 30 দিনের জন্য সক্রিয় থাকতে হবে।
  • বাংলালিংক ব্যালেন্স ট্রান্সফার সম্পন্ন হলে পরবর্তী ৩০ মিনিটের জন্য কোন ব্যালেন্স ট্রান্সফার করা সম্ভব হবে না।এক সিম থেকে অন্য সিমে ব্যালেন্স ট্রান্সফারের পাশাপাশি এই ৩০ মিনিটের জন্য ব্যালেন্স রিসিভ করার সুবিধাও বন্ধ থাকবে।
  • আপনার ইমার্জেন্সি ব্যালেন্স বকেয়া থাকলে আপনি বাংলালিংক ব্যালেন্স ট্রান্সফার সার্ভিস ব্যবহার করতে পারবেন না।
  • আপনি প্রতিদিন সর্বোচ্চ 500 টাকা এবং প্রতি মাসে সর্বোচ্চ 1000 টাকা পাঠাতে পারবেন।
  • বাংলালিংক ব্যালেন্স ট্রান্সফার কোড ভুলে গেলে *1000# ডায়াল করুন এবং 3 লিখে পাঠান।
  • এর পরে, আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের শেষ 4 সংখ্যাটি পাঠান তাহলে আপনার পিন কোডটি পাবেন।

রবি সিমে ব্যালেন্স ট্রান্সফার করার নিয়ম

রবি সিম থেকে ব্যালেন্স ট্রান্সফার করা তুলনামূলকভাবে সহজ।  রবি সিম থেকে ব্যালেন্স স্থানান্তর করতে নিম্নলিখিত ধাপগুলি অতিক্রম করতে হবে:-

  1. প্রথমে আপনাকে *140*6*2# ডায়াল করতে হবে যে নাম্বার থেকে আপনি টাকা ট্রান্সফার করতে চান।

আরও পড়ুনঃনোকিয়া বাটন মোবাইলের দাম ২০২২

  2. তারপর রবি সিম থেকে আপনি যে পরিমাণ ব্যালেন্স পাঠাতে চান তার পরিমাণ লিখুন।

  3. রবি সিম থেকে ব্যালেন্স  ট্রান্সফার করার শেষ ধাপে, আপনি যে নাম্বারে ব্যালেন্স পাঠাতে চান সেটি লিখতে হবে এবং সেন্ড বাটনে ক্লিক করতে হবে।

  4. এর পরে আপনি রবি সিম থেকে ব্যালেন্স ট্রান্সফারের একটি নিশ্চিতকরণ বার্তা পাবেন।

রবি সিমে ব্যালেন্স ট্রান্সফারের জন্য কিছু শর্ত রয়েছেঃ

  • রবি সিম থেকে ব্যালেন্স ট্রান্সফার সুবিধা পেতে আপনাকে সেই প্রিপেইড বা পোস্টপেইড রবি সিমটি কমপক্ষে ৩০ দিনের জন্য ব্যবহার করতে হবে।

  • আপনি রবি সিম থেকে 5 টাকা থেকে শুরু করে 100 টাকা পর্যন্ত ব্যালেন্স ট্রান্সফার করতে পারবেন।  আপনি প্রতিদিন 500 টাকা এবং প্রতি মাসে 1000 টাকা পর্যন্ত ব্যালেন্স ট্রান্সফার করতে পারবেন।

  • প্রতিবার রবি সিম থেকে ব্যালেন্স ট্রান্সফার করার সময় প্রেরক এবং প্রাপক উভয়ের কাছ থেকে 2 টাকা + ভ্যাট চার্জ কাটা হবে।

এয়ারটেল সিমের ব্যালেন্স ট্রান্সফার করার নিয়ম

এয়ারটেল সিমে ব্যালেন্স ট্রান্সফারের জন্য কোনো নির্দিষ্ট এয়ারটেল ব্যালেন্স ট্রান্সফার কোড নেই।  বরং মেসেজের মাধ্যমে এই অপারেটরের এক সিম থেকে অন্য সিমে ব্যালেন্স স্থানান্তর করা হয়।  আপনার কাছে এয়ারটেল ব্যালেন্স ট্রান্সফার কোড না থাকলেও, আপনি নিম্নোক্ত উপায়ে সহজেই এয়ারটেল ব্যালেন্স ট্রান্সফার সার্ভিসটি ব্যবহার করতে পারবেন।

  

  1.এই ক্ষেত্রে, যেহেতু কোনও এয়ারটেল ব্যালেন্স ট্রান্সফার কোড নেই, আপনার মোবাইলের মেসেজ অপশনে যান এবং 1000 লিখে পাঠান। ফিরতি বার্তায় আপনাকে একটি পিনকোড দেওয়া হবে

 2. তারপর মেসেজ অপশনে যান এবং BTR <স্পেস> পিন (আগের মেসেজে পাওয়া পিন) <স্পেস> রিসিভার নাম্বার <স্পেস> 1000 নম্বরে ট্রান্সফার পরিমাণ পাঠান।  (একবারে 5 টাকা থেকে 100 টাকা পর্যন্ত ব্যালেন্স ট্রান্সফার করা যাবে।

আরও পড়ুনঃজন্ম নিবন্ধন সনদ । Birth certificate online copy

বন্ধুরা, আপনারা দেখেছেন যে আমাদের কাছে এয়ারটেল ব্যালেন্স ট্রান্সফার কোড না থাকলেও আমরা কত সহজে এসএমএসের মাধ্যমে ব্যালেন্স ট্রান্সফার করতে পারি?

এয়ারটেল ব্যালেন্স ট্রান্সফারও কিছু শর্ত আছে:

  • এয়ারটেল সিম ব্যালেন্স ট্রান্সফারের জন্য 30 দিনের জন্য ব্যবহার করতে হবে তা প্রিপেইড বা পোস্টপেইড সিম হোক।
  •   এক সিম থেকে অন্য সিমে ব্যালেন্স স্থানান্তর করা সম্ভব প্রতিদিন সর্বোচ্চ 500 টাকা এবং প্রতি মাসে 1000 টাকা পর্যন্ত।
  •   প্রতিটি ব্যালেন্স ট্রান্সফারের জন্য প্রেরক এবং প্রাপক উভয়ের জন্য 2.55 টাকা চার্জ প্রযোজ্য হবে।
শেষ কথা

এক সিম থেকে অন্য সিমে ব্যালেন্স ট্রান্সফার করার নিয়ম: নিয়ে উপরে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি সবাই বুঝতে পেরেছেন। আমরা সহজেই এক সিম থেকে অন্য সিমে ব্যালেন্স ট্রান্সফার করতে পারি কোন জামেলা ছাড়াই।কেউ কিছু বুঝতে না পারলে কমেন্ট বক্সে জানাবেন। ধন্যবাদ সবাইকে। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url