মেঘনাদবধ কাব্য কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর

মেঘনাদবধ কাব্য কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর  পোস্টে আপনাকে স্বাগতম। মেঘনাদবধ কাব্য কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর খুজতেছেন? আজকের আর্টিকেল টি আপনাদের জন্য। আজকের আর্টিকেলে মেঘনাদবধ কাব্য কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর শেয়ার করা হবে। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।

মেঘনাদবধ কাব্য কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর

মেঘনাদবধ কাব্য কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন-১. মৃগেন্দ্রকেশরী, কবে, হে বীরকেশরী, সম্ভাষে শৃগালে মিত্রভাবে?’

কথাটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে? উত্তর: ‘মৃগেন্দ্রকেশরী, কবে, হে বীরকেশরী, সম্ভাষে শৃগালে মিত্রভাবে’— কথাটি দ্বারা মর্যাদাসম্পন্ন কেউ যে নীচুস্তরের কারো প্রভুত্ব স্বীকার করে না সেটিই বোঝানো হয়েছে। লক্ষ্মণকে হত্যার উদ্দেশ্যে মেঘনাদ অস্ত্রাগারের পথ ছাড়তে বললে বিভীষণ জানান যে, তিনি এ কাজ করতে পারবেন না। কেননা তিনি রামের আজ্ঞাবহ বলে তাঁর পক্ষে রামের বিরুদ্ধ কাজ করা সম্ভব নয়। তাঁর এই উত্তর শুনে মেঘনাদ বিভীষণকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন যে, লঙ্কার শ্রেষ্ঠ বংশে তাঁর জন্ম। অথচ রামের দাস বলে নিজেকে কলঙ্কিত করলেন তিনি। এমতাবস্থায় মেঘনাদ বিভীষণকে এটাও মনে করিয়ে দেন যে, সিংহের কখনো শেয়ালের সাথে বন্ধুত্ব হয় না।

প্রশ্ন-২. ‘কী দেখি ডরিবে এ দাস হেন দুর্বল মানবে?’ উক্তিটি ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: ‘কী দেখি ডরিবে এ দাস হেন দুর্বল মানবে?’— উক্তিটি দ্বারা মেঘনাদের বীরত্বের কথা বোঝানো হয়েছে। লঙ্কার শ্রেষ্ঠ বীর মেঘনাদকে যজ্ঞরত অবস্থায় লক্ষ্মণ যুদ্ধে আহ্বান করেন। অস্ত্রহীন মেঘনাদ যজ্ঞাগারের প্রবেশদ্বারে বিশ্বাসঘাতক বিভীষণকে দেখতে পেয়ে তাঁকে ভর্ৎসনা করেন। অস্ত্র নেওয়ার জন্যে দ্বার ছাড়তে বলেন। বিভীষণ পথ ছাড়তে অস্বীকৃতি জানালে ইন্দ্ৰজিৎ মেঘনাদ বিভীষণকে স্মরণ করিয়ে দেন দেব-দৈত্য-নরের যুদ্ধে তাঁর বিজয় লাভের কথা। তিনি একথার মাধ্যমে বুঝিয়ে দেন যে, লক্ষ্মণের মতো দুর্বল মানবকে ভয় পাওয়ার মতো বীর তিনি নন।

প্রশ্ন-৩. ‘হেন সহবাসে, হে পিতৃব্য, বর্বরতা কেন না শিখিবে?’ উক্তিটি ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: উক্তিটির মাধ্যমে মেঘনাদ বোঝাতে চেয়েছেন যে, লক্ষ্মণের মতো কপট ও হীন ব্যক্তির সাহচর্যে থাকার কারণেই বিভীষণ বিশ্বাসঘাতকতার মতো বর্বরতা শিখেছেন। মেঘনাদ বিভীষণকে বিভিন্নভাবে ভর্ৎসনা করলে তিনি জানান যে, লঙ্কার রাজার কর্মদোষে আজ সোনার লঙ্কার এই পরিণতি। আর এই পাপপূর্ণ লঙ্কাপুরের প্রলয় থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যে তিনি রামের পদাশ্রয় গ্রহণ করেছেন। একথা শুনে মেঘনাদ জানতে চান, কোন ধর্মবলে তিনি দেশ-জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা শিখলেন? তিনি পরিতাপের সঙ্গে বলেন যে, সঙ্গদোষের ফলে বিভীষণের এমন বর্বরতা শেখাই স্বাভাবিক।

প্রশ্ন-৪, নাহি শিশু লঙ্কাপুরে, শুনি না হাসিবে এ কথা কেন বলা হয়েছে?

উত্তর: অস্ত্রহীন মেঘনাদের কাছে অস্ত্রসাজে সজ্জিত লক্ষ্মণের যুদ্ধ প্রার্থনা যে অত্যন্ত হাস্যকর— সে কথাই এই উক্তিটি দ্বারা ব্যক্ত করা যজ্ঞরত মেঘনাদকে আক্রমণের জন্যে লক্ষ্মণ অস্ত্র কোষমুক্ত করলে- মেঘনাদ যুদ্ধসাজ গ্রহণের জন্যে সময় প্রার্থনা করেন লক্ষ্মণের কাছে। তিনি লক্ষ্মণকে এও স্মরণ করিয়ে দেন যে, যুদ্ধে বীরের ধর্ম হচ্ছে সামনাসামনি যুদ্ধ করা। অস্ত্রসাজে সজ্জিতের সাথে নিরস্ত্রের যুদ্ধ হয় না। কিন্তু বীরের আচরণকে কলঙ্কিত করে লক্ষ্মণ জার্নান, তিনি যেকোনো কৌশলে শত্রুহনন করতে চান। লক্ষ্মণের এ আচরণের কারণেই বলা হয়েছে যে, লঙ্কাতে এমন কোনো শিশু নেই যে একথা শুনে হাসবে না।
প্রশ্ন-৫. “এতক্ষণে”— অরিন্দম কহিলা বিষাদে— মেঘনাদের এ অভিব্যক্তির কারণ কী?

উত্তর: বিভীষণের সাহায্যেই যে লক্ষ্মণ নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে প্রবেশ করেছেন এ বিষয়টি বুঝতে পেরেই মেঘনাদের এ অভিব্যক্তি। ভ্রাতা কুম্ভকর্ণ ও পুত্র বীরবাহুর মৃত্যুর পর মেঘনাদকে পিতা রাবণ পরবর্তী দিবসে অনুষ্ঠেয় মহাযুদ্ধের সেনাপতি হিসেবে বরণ করেন। আর যুদ্ধ জয় নিশ্চিত করতে মেঘনাদ নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে অগ্নিদেবের পূজা সম্পন্ন করতে যান। হঠাৎ যজ্ঞাগারে মেঘনাদ লক্ষ্মণকে অস্ত্রসহ দেখতে পান। দ্বারে পিতৃব্য বিভীষণকে দেখে তিনি বুঝতে পারেন যজ্ঞাগারে লক্ষ্মণের প্রবেশ তাঁর ষড়যন্ত্রেই ঘটেছে। আর এ বিষয়টি উপলব্ধির পরই মেঘনাদ আলোচ্য অভিব্যক্তিটি ব্যক্ত করেছেন।

প্রশ্ন-৬. ‘কে তুমি? জনম তব কোন মহাকুলে?’— মেঘনাদ এ উক্তিটি কেন করেছেন?

উত্তর: রক্ষকুলের বীর পিতৃব্য বিভীষণ স্বজাতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় বিস্মিত মেঘনাদ পিতৃব্যের বংশমর্যাদা স্মরণ করিয়ে দিতে আলোচ্য উক্তিটি করেছেন। রাবণের কনিষ্ঠ সহোদর, মেঘনাদের পিতৃব্য বিভীষণ রাম-রাবণের যুদ্ধে স্বপক্ষ ত্যাগ করেছেন। এখন তিনি নিজেকে রাঘবের দাস হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন। পিতৃব্যের মুখে এরূপ কথা শুনে বীর মেঘনাদের মরে যেতে ইচ্ছে করে। তিনি পিতৃব্যকে তাঁর বংশপরিচয় সম্পর্কে স্মরণ করিয়ে দেন। নিজের মর্যাদা ভুলে রাঘবের দাসে পরিণত হওয়া যে লজ্জাজনক কাজ, পিতৃব্য বিভীষণকে এ বিষয়টি মনে করিয়ে দিতেই মেঘনাদ আলোচ্য উক্তিটি করেছেন।

প্রশ্ন ৭. “নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে প্রগলতে পশিল দম্ভী’ উক্তিটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?

উত্তর: “নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে প্রগল্‌ভে পশিল দম্ভী’ উক্তিটি দ্বারা নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে নির্ভীকচিতে দাম্ভিকতার সাথে লক্ষ্মণের প্রবেশকে বোঝানো হয়েছে। নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে মেঘনাদের যজ্ঞাস্থান। যুদ্ধে যাওয়ার পূর্বে তিনি এখানে ইষ্টদেবতা অগ্নিদেবের পূজায় মগ্ন ছিলেন। এমন সময় গৃহশত্রু পিতৃব্য বিভীষণের সহায়তায় রামানুজ লক্ষ্মণ সেখানে প্রবেশ করেন। উক্তিটি দ্বারা নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে রামানুজ লক্ষ্মণের এরূপ নির্ভীকচিত্তে দাম্ভিকতাপূর্ণভাবে প্রবেশের বিষয়টিকেই বোঝানো হয়েছে।

প্রশ্ন-৮. লক্ষ্মণ কীভাবে রক্ষঃপুরে অনুপ্রবেশ করেন?

উত্তর: মায়াদেবীর আনুকূল্যে এবং বিভীষণের সহায়তায় প্রহরীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে লক্ষ্মণ রক্ষঃপুরে অনুপ্রবেশ করেন

প্রশ্ন-৯. মেঘনাদ কেন নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে পূজানুষ্ঠান করছিলেন?

উত্তর: আসন্ন যুদ্ধে জয়লাভের জন্যে ইষ্টদেবতা অগ্নিদেবের শুভাশীর্বাদ কামনায় মেঘনাদ নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে পূজানুষ্ঠান করছিলেন। মেঘনাদের পূজা-অর্চনার স্থান ছিল নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগার, যেখানে তিনি ইষ্টদেবতা অগ্নিদেবের উপাসনা করতেন। ভাই কুম্ভকর্ণ ও পুত্র বীরবাহুর মৃত্যুর পর লঙ্কাধিপতি রাবণ পরের দিন অনুষ্ঠেয় যুদ্ধের সেনাপতি হিসেবে মেঘনাদকে নির্বাচন করেন। সেই যুদ্ধে যাত্রার পূর্বে মেঘনাদ অগ্নিদেবের পূজা সম্পন্ন করতে মনস্থির করেন। মূলত যুদ্ধে জয়লাভের প্রত্যাশায় অগ্নিদেবের আশীর্বাদ কামনায় মেঘনাদ নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে পূজানুষ্ঠান করছিলেন।

প্রশ্ন-১০. মেঘনাদের সঙ্গে লক্ষ্মণের যুদ্ধকে অন্যায় যুদ্ধ বলা হয়েছে কেন?

উত্তর : লক্ষ্মণ যুদ্ধের নিয়ম ভঙ্গ করে অস্ত্রহীন অবস্থায় মেঘনাদকে আক্রমণ করেছেন, তাই মেঘনাদের সঙ্গে লক্ষ্মণের যুদ্ধকে অন্যায় যুদ্ধ বলা হয়েছে। নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে যজ্ঞরত অবস্থায় মেঘনাদকে আক্রমণ করেন লক্ষ্মণ। মেঘনাদ তখন অস্ত্রহীন অবস্থায় ছিলেন এবং যুদ্ধের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্যে তিনি লক্ষ্মণের কাছে সময় প্রার্থনা করেছিলেন। কিন্তু লক্ষ্মণ সে সময় না দিয়েই আক্রমণ করে হত্যা করেন মেঘনাদকে। তাই মেঘনাদের সঙ্গে লক্ষ্মণের যুদ্ধকে অন্যায় যুদ্ধ বলা হয়েছে।

প্রশ্ন-১১. রামচন্দ্র কর্তৃক লঙ্কা আক্রান্ত হয়েছিল কেন? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর : সীতাকে রাবণ অপহরণ করেছিলেন বলেই রামচন্দ্র কর্তৃক লঙ্কা আক্রান্ত হয়েছিল। বনবাসে থাকা অবস্থায় লক্ষ্মণ কর্তৃক শূর্পণখার অপমান হলে রাবণ অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন। তিনি প্রতিশোধ নিতে রামের কুটিরে যান এবং সেখান থেকে সীতাকে অপহরণ করেন। সীতাকে উদ্ধার করার জন্যেই রামচন্দ্র কর্তৃক লঙ্কা আক্রান্ত হয়েছিল।

প্রশ্ন-১২. দৈব কৌশল বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর : দেবতা প্রদত্ত কৌশলকেই দৈব কৌশল বলা হয়। রাম ও রাবণের যুদ্ধে দেবতারা রামের পক্ষাবলম্বন করেন। সে কারণে রাবণের প্রবল পরাক্রমী পুত্র বীরবাহু ও মেঘনাদের প্রবল শক্তিও রাম-লক্ষ্মণের শক্তির কাছে স্তিমিত হয়ে যায়। কারণ তাঁদের শক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে দেবতারা নানা কৌশল দিয়ে রাম-লক্ষ্মণকে সাহায্য করছিলেন।

প্রশ্ন-১৩. মেঘনাদের সঙ্গে যুদ্ধে লক্ষ্মণ মায়াদেবীর আশ্রয় নিয়েছিলেন কেন?

উত্তর : মেঘনাদকে পরাস্ত করতেই লক্ষ্মণ মায়াদেবীর আশ্রয় নিয়েছিলেন। নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে মেঘনাদ যজ্ঞরত অবস্থায় লক্ষ্মণ তাঁকে আক্রমণ করার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু তাঁর কাছে পৌছানো ততটা সহজ ছিল না। তাই পাহারারত শত শত রাক্ষসের চোখ ফাঁকি দিতে লক্ষ্মণ মায়াদেবীকে স্মরণ করেন এবং তাঁরই আনুকূল্যে মেঘনাদের কাছে পৌছান।

প্রশ্ন-১৪. মধুসূদন কীভাবে বাল্মীকির কাব্যকে নবমূল্য দান করেছেন?

উত্তর : মধুসূদন রাম ও রাবণকে মানবিক করে তুলে বাল্মীকির কাব্যকে নবমূল্য দান করেছেন। বাল্মীকি রচিত রামায়ণে রাবণ ছিলেন রাক্ষসরাজ আর রামচন্দ্র বিষ্ণু অবতার। দেব ও রাক্ষসের যুদ্ধে সেখানে দেবতার জয় হয়। কিন্তু মধুসূদন দত্ত তাঁর কাব্যে রাবণকে দেশপ্রেমিক এক রাজা ও রামকে বহিঃশত্রুরূপে চিহ্নিত করেছেন। পৌরাণিক ওই চরিত্র দুটিকে মানবিক করে তোলার মধ্য দিয়ে মধুসূদন বাল্মীকির কাব্যকে নবমূল্য দান করেছেন।

প্রশ্ন-১৫. মেঘনাদ লক্ষ্মণকে ‘ক্ষুদ্রমতি নর’ বলেছেন কেন?

উত্তর: নিরস্ত্র মেঘনাদকে যুদ্ধে আহ্বান করার কারণে মেঘনাদ লক্ষ্মণকে ক্ষুদ্রমতি নর বলেছেন। কপটতার আশ্রয় নিয়ে লক্ষ্মণ মেঘনাদের যজ্ঞাগারে প্রবেশ করেন। এ ছাড়াও লক্ষ্মণ নিরস্ত্র মেঘনাদকে যুদ্ধে আহ্বান জানান। যুদ্ধসাজে সজ্জিত লক্ষ্মণ অস্ত্রহীন মেঘনাদের সঙ্গে যে আচরণ করেছেন তা মোটেও বীরের মতো নয়। তাই মেঘনাদ লক্ষ্মণকে ক্ষুদ্রমতি নর বলেছেন।

প্রশ্ন-১৬. গুণবান পরজন অপেক্ষা নির্গুণ স্বজন শ্রেয় কেন?

উত্তর: প্রকৃত স্বজনরা কখনো জ্ঞাতিত্ব, ভ্রাতৃত্ববোধকে অস্বীকার করতে পারে না, তাই পরজন যদি গুণবানও হয় তবু তার চেয়ে নির্গুণ স্বজন অনেক ভালো।

মেঘনাদবধ কাব্য কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি সবাই বুঝতে পেরেছেন। কেউ কিছু বুঝতে না পারলে কমেন্ট বক্সে জানাবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url